শিল্পীর ইচ্ছে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু সামনে বিস্তর পথ কীভাবে পাড়ি দিবেন-জানেন না অটোরিকশা চালকের এই মেয়ে।
শিল্পী আক্তার এ বছর কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে একমাত্র জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থী। আশপাশের স্কুলেরগুলোর মধ্যে তার সাফল্যই সেরা।
শিল্পীর বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের শিবরাম ফকিরপাড়া গ্রামে। বাবা শফিকুল ইসলাম পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক। দিনভর অটো চালিয়ে খরচ মেটানোর পর ২৫০-৩০০ টাকা আয় হয়। তাই দিয়ে সংসারের হাল ধরে আছেন। বাড়ি ভিটার ৭ শতক জমি ছাড়া কিছুই নেই চার সদস্যের এই পরিবারটির।
শিল্পী বলেন, ‘এসএসসি টেস্ট পেপার কেনার সামর্থ্য না থাকায় সহপাঠীদের কাছ থেকে বই ধার করে এনে দুই একদিন পড়ে ফেরত দিয়েছি। একইভাবে স্যারদের কাছ থেকে সৌজন্য সংখ্যা এনে পড়ে আবার ফেরত দিতে হয়েছে।’
শিল্পী আরও জানান, তার বাবার সামান্য আয়ে সংসার চলতো না ঠিকমতো। বড় ভাই রুবেল আহমেদ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে পড়েন। দুই ভাই বোনের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হিমশিম খাওয়া বাবা খরচ মেটাতে না পারায় ঠিকমত প্রাইভেট টিউশনি পড়তে পারেননি। স্কুলের শিক্ষকের সহযোগিতা, বাবা-মা এবং বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণার ফলে তার স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ পেরোনো সম্ভব হয়েছে।
শিল্পীর ইচ্ছে চিকিৎসক হওয়া। যদিও জানেন তার স্বপ্ন পূরণের পথে পথে রয়েছে অনেক বাধা। তবুও হাল ছাড়তে রাজী নয় সে। নিজের কঠোর পরিশ্রম আর চেষ্টার সাথে কারো সহায়তা পেলে হতে পারে তার ইচ্ছেপূরণ।
কাঁঠালবাড়ী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল আহসান বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শিল্পী খুব মেধাবী। অনেক কষ্টে সে লেখাপড়া করত। তবে কখনও হতাশ হতে দেখিনি। তার এই ফলাফলে আমরা সত্যি গর্বিত।’